আল আমিন রানা কয়রা (খুলনা) থেকে।
খুলনার কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২নং কয়রা ও ওড়াতলা গ্রামের একটি খালের ওপর নির্মিত ব্রিজের দুইপাশের রেলিং দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে পড়ে আছে। ব্রিজের উপরের অংশের ঢালাই উঠে গিয়ে গর্তে পরিণত হয়েছে। সেই গর্তের মাঝে বালু সিমেন্টের জোড়া তালি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে পাঁচ গ্রামের মানুষ।বছরের পর বছর এ ব্রিজটি এ অবস্থায় থাকলেও সংস্কারের কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে যেকোন সময় এখানে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজটি বড়মাপের দুর্ঘটনার আগেই ভেঙে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কয়রা সদর ইউনিয়নের ২ নং কয়রা খালের ওপর নির্মিত সেতুটির দুই পাশে নেই কোনো রেলিং। বেশিরভাগ পিলারের পলেস্তরা উঠে গেছে এবং সেতুটির মাঝখানে ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বেরিয়ে গেছে রড। ভেঙে যাওয়া সেতুটির বড় একটি অংশে কাঠের পাটাতন ও বাঁশ বিছিয়ে পার হচ্ছে পাঁচ গ্রামের হাজারো মানুষ ও যানবাহন। যে কোনো সময় পুরো সেতুটি ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
সেতুটি দিয়ে গোবরা,২নং কয়রা, মদিনাবাদ,ওড়াতলা,গোবরা পূর্বচক গ্রামের মানুষজন প্রতিদিনই চলাচল করেন।
বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় প্রতিদিন ওই সেতু দিয়ে কোমলমতি শিশু ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন। অনেকে আহত হয়েছে বলেও খবর শোনা গেছে। অথচ সেতুটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই তেমন উদ্যোগ।
স্থানীয় গোবরা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ সরদার বলেন,সেতুটির যা অবস্থা তাতে ছেলেমেয়েরা পার হতে ভয় পায়। বেশি লোক উঠলেই দুলতে থাকে সেতুটি। তাই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দ্রুত মেরামত বা নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানায়। কয়রা ও ওড়াতলা হাফিজিয়া মাদরাসার সামনে ১৯৯৬ সালে খালের ওপর সেতুটি নির্মিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি নির্মাণের কোনো লক্ষণ নেই। আতঙ্ক আর ঝুঁকি নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করছে। সেতুটি যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
কয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাহারুল ইসলাম বলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের ৪ ও ২ নং ওয়ার্ডের সংযোগ স্থলে নির্মিত সেতুটির ওপর দিয়ে পার্শবর্তী ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের জনসাধারণের কয়রা সদরে আসতে হয়। ওই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচলের সময় ভয়ে থাকতে হয়। কখন যেন এটি ভেঙে পড়ে। এমন আশঙ্কা নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ দারুল হুদা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শিগগিরই সেতুটি পূর্ণ নির্মাণ করা হবে।
কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন, সেতুটি অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফোনঃ ০১৭৬৭-৮০১৯০১
Leave a Reply